ইউনাইটেড এয়ারের রাইট শেয়ার : আইন শিথিলের সুপারিশ বিমান মন্ত্রণালয়ের
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের রাইট শেয়ার ইস্যুর ক্ষেত্রে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আইন শিথিলের সুপারিশ করেছে। গত বুধবার মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব আব্দুর রশিদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ সুপারিশ করা হয়।
রাইট শেয়ার ইস্যুর ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের কাছে সম্মিলিত ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকা বাধ্যতামূলক। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ কোম্পানির ক্ষেত্রে এ বিষয়টি শিথিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিএসইসিকে। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের পরিশোধিত মূলধন বেশি হওয়ার কারণে এ নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, কোম্পানির ব্যবসার ধরন ভেদে এ আইনে ভিন্নতা রাখা উচিত বলে মনে করে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এদিকে বিদ্যমান আইনে এ প্রস্তাব কোনোভাবেই বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন বিএসইসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ অতীতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একইভাবে বিএসইসিকে চাপ প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরেক কর্মকর্তা বলেন, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহে আগ্রহী হলেও আইন প্রতিপালন না করার কারণে তা করতে পারছে না। এ কারণে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে।
গত ২০১০ সালের ধসের আগে ফেঁপে ওঠা বাজারে কোম্পানির পরিচালকরা তাদের কাছে থাকা শেয়ার উচ্চ দরে বাজারে বিক্রি করে দেয়। ফলে বাজারে বড় ধরনের পতন হয়। এরপর ২০১১ সালের ২২ নভেম্বর বিএসইসির পক্ষ থেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের কাছে সম্মিলিত ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়। পাশাপাশি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে থাকতে হলে ব্যক্তিগতভাবে কমপক্ষে ২ শতাংশ শেয়ার থাকা বাধ্যতামূলক করে। আর এ বাধ্যকতা পালন না করলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যু করে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে না- এমন আইন জারি করে বিএসইসি।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী ইউনাইটে এয়ারওয়েজের পরিচালনা পর্ষদের কাছে মাত্র ১২.৩৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ফলে রাইট শেয়ার ইস্যুর ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়েছে কোম্পানিটির।
জানা যায়, বিএসইসি এ নিয়ম চালুর পর একাধিক রিটের সম্মুখীন হয়। এ আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালক রিট করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের মে মাসে বিএসইসির এ নিয়মের বৈধতা এবং সব কোম্পানির পরিচালকদের তা মেনে চলার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। পরবর্তীতে ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তালিকাভুক্ত ১০৩ কোম্পনির ৩৫৯টি পদ শূন্য ঘোষণা করে। ব্যক্তিগতভাবে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে না পারায় এ শূন্য পদের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে বিএসইসি এসব পদ পূরণের মাধ্যমে নতুন বোর্ড গঠনের নির্দেশ দেয় কোম্পানিগুলোকে।