এরশাদকে নিয়ে ডিজিটাল দুনিয়ায় তোলপাড়
চরিত্র হিসেবে তিনি আলোচিত বহুকাল ধরে। ‘স্বৈরাচারী’, ‘বিশ্ববেহায়া’ এসব নেতিবাচক বিশেষণ জুটেছে বহু আগে। কিন্তু এবার সবকিছু ছাপিয়ে তার থুতু তত্ত্বের কারণে তিনি এখন ‘থুতুবাবা’। সাবেক সেনাশাসক এরশাদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ডিজিটাল দুনিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিশেষ করে তার থুতু তত্ত্ব নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। বলা যায়, নিন্দার ঝড়।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে একজন লিখেছেন, ‘ক’দিন আগে এরশাদ বলেছিলেন নির্বাচনে গেলে মানুষ তাকে থুতু দেবে। আজ নাকি বলেছেন, তিনি নির্বাচনে যাবেন। নবাগত শীতে মানুষের মুখের থুতু কি শুকিয়ে গেছে।’
অতল লিখেছেন, ‘থুতুর ম্যালা দাম। অজায়গায় ফেলে থুতুর অবমূল্যায়ন করতে চাই না।’
ছড়াকার পলাশ মাহবুব বলেছেন, ‘আবারও হইলো ‘কিয়ার’/এরশাদ একটা ‘পিলিয়ার’।
একজন সংবাদ ব্যবস্থাপক সোমবার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জোটে আছি, জোটে নাই। নির্বাচনে যাবো, যাবো না। একক নির্বাচনে যাবো। জোটে নাই, মন্ত্রসিভায় আছি। … হোমো এরশাদ তোমার ভাষা বোঝার আশা দিয়েছি জলাঞ্জলি।’এখানে মন্তব্য করেছেন এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা এরশাদ। তিনি এরশাদকে বলেছেন, ‘অনন্ত জলিল।’
সুমন লিখেছেন, ‘আজ বুঝলাম এরশাদ আসলেই বিশ্ববেহায়া। ডিগবাজি চাচা। ভণ্ডচাচা। এই কলা গাছের দাম আছে কিন্তু এরশাদের কোনো দাম নাই।’
তালুকদার বলেছেন,‘মুরব্বিরা বলতেন, আকাশের রঙ আর নারীর মন-রহস্য বিধাতাও বুঝতে পারেনি। এখন থেকে বিধাতার অভেদ্য রহস্যের তালিকায় এরশাদের নামও যোগ হলো! … উনার বর্ণ বুঝতে বিধাতাও বোধহয় নাজেহাল।’
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ সোমবার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এরশাদ মহাজোট থেকে বের না হলে ভালোই সমস্যা হতো, ‘সর্বদলীয় সরকার’কে লোকে বলতো মহাজোট সরকার। আল্লামা শফীর দোয়ায় সেই সমস্যা দূর হয়েছে!!’ এ স্ট্যাটাসের ওপর মন্তব্য লিখেছেন পারভেজ। তিনি বলেছেন, ‘গৃহপালিত বিরোধী দল হতে যাচ্ছেন তিনি (এরশাদ)।’
শাহবাগের সাইবার যোদ্ধা মাইন উদ্দিন বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে রাজাকারমুক্ত করতে এরশাদের যতটুকু অবদান, ইতিহাস মনে রাখবে।’ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের স্ট্যাটাসে মন্তব্য করতে গিয়ে তাফসির আহমেদ টিটু লিখেছেন, ‘জনগণের নেতা ইমরান হাশমি থুক্কু ইমরান হেইচ ছারখার কি সর্বদলীয় সরকারে যোগ দিচ্ছে?’
সাবেক একজন ছাত্রনেতা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শুনলাম কাদের সিদ্দিকী নাকি এরশাদকে একটা গামছা পাঠিয়েছেন, মানুষের দেয়া থুতু মুছতে! সে দিন যখন তিনি সখিপুরের সমাবেশের মঞ্চে বসে বিদেশের আদালতে চোর হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত আবুল হাসান চৌধুরীকে পাশে বসিয়ে ‘বর্তমান মহা চোর’ সরকার উৎখাতের জন্য শলাপরামর্শ করছিলেন, তখন কোনো এক ফাঁকে পাশে বসা এরশাদের এক নেতার হাতে গোপনে গামছার প্যাকেটটা তুলে দেন!’ তার এ স্ট্যাটাসে মন্তব্যের ঘরে এম এন ইলাম লিখেছেন, ‘কাদের সিদ্দিকীর আর দোষ দিয়ে লাভ কী? প্রধানতম দলগুলোর তো ‘চোরের সাথে’ বসবাস!!’
ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তারা আসলে এরশাদের রাজনৈতিক অপরাধের সমালোচনা করছেন না, এরশাদ তাদের মনের আশা পূরণ করেনি বলে এরশাদকে নিয়ে অভিমান প্রকাশ করছেন ! আমি এরশাদকে কোলে নেয়া এবং নেয়ার চেষ্টাÑ দুটোরই নিন্দা করি।’ এখানে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এরশাদকে সবাই নতুন করে বেঈমান হিসেবে চিহ্নিত করছে। ’৮২ সাল থেকে এই পর্যন্ত চিনতে পারেনি? আমি দেখছি ভিন্নভাবে। এরশাদই একমাত্র নেতা (?) যে তার চরিত্র পরিবর্তন করেনি।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘বিএনপিও বুঝতে পারছে তারা ভেনিসের পথে অগ্রসর হচ্ছে…কিন্তু এই মুহূর্তে তাদের করার কিছুই নেই। রাজাকার নিয়ে ঘর করার প্রায়শ্চিত্ত যে তাদের করতেই হবে। সো, আওয়ামী লীগকেও স্বৈরাচার নিয়ে ঘর করার প্রায়শ্চিত্তের জন্য বেশি দিন অপোও করতে হবে না।’
সরকার দলীয় এমপি গোলাম মাওলা রনি লিখেছেন, ‘জনাব এরশাদকে নিয়ে এই মুহূর্তে পুরো দেশ আতঙ্কিত। আতঙ্কিত আমি নিজেও। সম্ভবত তার সাবেক স্ত্রী বিদিশাও কম আতঙ্কিত নন।’