ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া হাসিনা : নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয়

নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগেই যে কোনো উপায়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  বিরোধী দলকে যে কোনো পন্থায় দমিয়ে রাখার চেষ্টায় কমতি নেই তার। এর অংশ হিসেবে শেখ হাসিনা নিজের নেতৃত্বে একটি “সর্বদলীয়” সরকারও গঠন করে নিয়েছেন। এমন পর্যবেক্ষণ দিয়ে বুধবার সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।
‘পলিটিক্যাল ক্রাইসিস ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামের  সম্পাদকীয়তে বলা হয় বিগত ২০১১ সালে হাসিনা সরকার এক তরফাভাবে নির্বাচনপূর্ব নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার সাংবিধানিক পদ্ধতিকে বাতিল করে দেয়। এ পদ্ধতির বদলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নেতৃত্বে “সর্বদলীয়” সরকার গঠন করে নিয়েছেন। কিন্তু তার এ পদ্ধতিকে গ্রহণযোগ্য নয় বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন বিরোধী দলীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তার দল বিএনপি। দুই দলের এ অবস্থানের কারণে দেশে বিষ্ফোরণ্মুখ অচলাবস্থা বিরাজ করছে। দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের দায়-দায়িত্ব শেখ হাসিনার ওপরই বর্তায়।
রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে সম্পাদকীয়তে বলা হয়, বছর শুরুর আগে থেকেই একের পর এক হরতাল এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সংঘর্ষে স্থবির হয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। দেশটির প্রধান বিরোধী দলের নেতা ও মানবাধিকার কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সঠিক প্রক্রিয়ার অনুসরণ না করে আদালত থেকে ত্রুটিপূর্ণ রায় দেয়া হচ্ছে। এমনকি যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া ব্যতিরেকে মৃত্যুদন্ডের রায়ও দেয়া হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে সম্পাদকীয়তে  বলা হয়, ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারের জন্য ২০০৯ সালে সরকার আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। এ আদালতে বিরোধী পক্ষের নেতাদেরকেই “টার্গেট” করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমে মনে হয়েছে এটি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে দমন করার অপর একটি মাধ্যম।
এতে বলা হয়, আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিএনপির প্রধান শরীক দল জামায়াতে ইসলামকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সমর্থক বাংলাদেশীরা মনে করে দেশের ভিত্তি রচনায় ইসলামপন্থী দলগুলো ছিলো হুমকিস্বরূপ। কিন্তু জামায়াতকে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে সরিয়ে নেতা-কর্মীদের রাজপথে সংঘাতের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
দেশের এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক চাপ বেড়ে যাবে উল্লেখ করে সম্পাদকীয়তে বলা হয়, যদি বাংলাদেশে নাগরিক অধিকার লংঘনের এসব কার্যক্রম অব্যাহত থাকে তবে বাংলাদেশের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে যেতে পারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচিত বাংলাদেশের বিচার বিভাগের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করা, মানবাধিকার লংঘন কার্যক্রম বন্ধ করা এবং পরবর্তী নির্বাচনের জন্য গ্রহণযোগ্য অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে একটি পথ খুঁজে বের করা।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button