লন্ডনে বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের এজিএম অনুষ্ঠিত
বিলেতে বাঙালিদের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের (বিসিএ) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ১৭ নভেম্বর রোববার লন্ডনের ক্যাভেন্ডিস ব্যাঙ্কুয়েটিং হলে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় গত এক বছরের সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরার পাশাপাশি সংগঠনের আর্থিক হিসাব পেশ করা হয়। এতে বিসিএর সকল সদস্যবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বিসিএ’র সেক্রেটারী জেনারেল এম এ মুনিম সংগঠনের গত এক বছরের কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, নির্বাচনে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০টি রিজিওনাল কমিটির মধ্যে ইতিমধ্যে ১৫টি কমিটি গঠন সম্পন্ন হয়েছে। এসব কমিটি গঠনের মাধ্যমে বিসিএ ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়িদের কাছে পৌঁছে গেছে। যার সুফল পাচ্ছেন এর সদস্যরা। অতি দ্রুততম সময়ে বাকী রিজিওনাল কমিটিগুলো গঠন করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি জানান, রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়িদের জন্য ভিএটি হ্রাস, অবৈধ ধরার নামে ইমির্গ্যাশন পুলিশের অতর্কিত অভিযান এবং স্টাফ সংকট রোধে বিসিএ ধারাবাহিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গত এক বছরে তারা এসব বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের এমপি, মন্ত্রীসহ হোম অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। অতি সম্প্রতি বিসিএ এর সমস্ত রিজিওনাল কমিটিগুলোর সাথে হোম অফিসের একটি সেমিনারের আয়োজন করে। এ সেমিনারে সরকারি নীতিমালা কীভাবে রেষ্টুরেন্ট ব্যবসার জন্য সমস্যা তৈরি করছে তা তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে অবৈধ ইমিগ্রঅন্ট ধরার নামে রেস্টুরেন্টে অভিযান চালানোর বিষয়ে হোম অফিসকে আরো বেশি সতর্কতা অবলম্বরের দাবি জানানো হয়।
এম এ মুনিম জানান, গত এক বছরে বিসিএর সদস্যদের জন্য নানামুখি সেবা চালু করেছে বর্তমান কমিটি। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলে এ্যনার্জি কো¤পানী এন পাওয়ার এবং স্কয়ার মাইল ইন্স্যুরেন্সের সাথে বিসিএর চুক্তি। এ সেই সাথে বিসিএর মেম্বাররা যদি এন পাওয়ারের সেবা গ্রহণ করেন তাহলে তারা ২শ পাউন্ড ক্যাশব্যাক পাবেন। সেই সাথে বিবিএর সদস্যপদ নবায়নের জন্য তাদেরকে পরবর্তিবার আর ফি দিতে হবে হবে না। অন্যদিকে বিসিএর সদস্যরা স্কয়ার মাইল ইন্সুরেন্স কো¤পানীর যে কোন সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট পাবেন। এছাড়া সদস্যদের জন্য ফ্রি লিগ্যাল এডভাইজ চালু করা হয়েছে।
বিস্তারিত বিসিএ’র ওয়েবসাইট এ জানা যাবে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট খন্দকার নূর-উর রহমান পাশা বলেন, বিসিএ গত এক বছরে সুদুর প্রসারী কার্য স¤পাদন করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষ করে রিজিওনাল কমিটিগুলো বিসিএর কার্যক্রম অনেক বেশি প্রসারিত করেছে। তিনি বলেন আজকের বিসিএ অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় শক্তিশালী। এ সময় তিনি রিজিওনাল কমিটিগুলোর উদ্দেশ্যে ভিএটি, হোম অফিসের অভিযান এবং স্টাফ সংকট নিরসনে নিজ নিজ এলাকার এমপিদের সাথে লবিং অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। হোম অফিসের বিরুদ্ধে বিসিএর সাবেক সভাপতির মামলা জয় এবং কমপেনসেশন আদায়ের প্রসঙ্গ টেনে পাশা খন্দকার বলেন এ ঘটনা হোম অফিসের জন্য একটি ভালো শিক্ষা হয়ে থাকবে।সেক্রেটারী এম এ মুনিম এবং ডেপুটি সেক্রেটারী এম কে জামানের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বার্ষিক হিসাব বিবরণী তুলে ধরেন জয়েন্ট চিফ ট্রেজারার মিঠু চৌধুরী। সদস্যদের সর্ব সম্মতিক্রমে হিসাব গৃহীত হওয়ার পর এ্যাবাকাস এন্ড কোং কে অডিটর হিসেবে পুনরায় নিয়োগ দেয়া হয়।
এ অনুষ্ঠানে বিসিএর সাবেক এবং বর্তমান নেতৃবৃন্দ, ব্যারিস্টার আনিস রহমান, ফজল উদ্দিন, আবদুল খালিক তালুকদার, কামাল ইয়াকুব, আবদুল মালিক স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তারা বিসিএর উজ্জল ভবিষ্যৎ কামনা করে বলেন, বিসিএ তার লক্ষ্য পূরণে সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে।এছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির এবং রিজিওনাল কমিটির অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিসিএ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাউথ ওয়েষ্ট রিজিওনের প্রেসিডেন্ট এনামুল হক চৌধুরী, নূরুল হক জেপি, গোলাম রব্বানী আহাদ, মাসুদ আহমদ, জামাল উদ্দিন, মকদ্দুস, অলি খান, টিপু রহমান, মেহেরুল ইসলাম, দরছ আহমদ,মানিক মিঞা, মিঠু চৌধুরী, মোজাহিদ আলী চৌধুরী, কামাল ইয়াকুব প্রমূখ।দুপুর ১২টায় বিসিএ’র সহ সভাপতি ইয়ুসুফ সেলিমের কোরান তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া এ সভা চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়।