আমদানি-রফতানি সেবায় ১৭৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৩৭তম
আমদানি-রফতানি সংশ্লিষ্ট প্রতিবন্ধকতা ও সমুদ্রবন্দর সংক্রান্ত সেবার মানদণ্ডে বিশ্বের ১৭৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৭তম। ‘এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট ২০১৩’তে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশলীতা, বিনিয়োগ ও লেনেদের সম্প্রসারণ দরকার বলে মনে করেন ব্যবসায়ী নেতারা। শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’র (ডিসিসিআই) সভাকক্ষে উপরিউক্ত রিপোর্ট প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব তথ্য উপস্থাপন করেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট ২০১৩’ জাতিসংঘের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ক আঞ্চলিক সংস্থা ইউনিসেফ’র একটি বার্ষিক প্রতিবেদন। এ প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রতিবছর এশিয়া অঞ্চলের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক অগ্রগতি তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদন তৈরিতে শ্রমিকদের কর্ম পরিবেশ, লিঙ্গ বৈষম্য, শিক্ষা পরিস্থিতি, সামাজিক সংলাপ, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, কারিগরি দক্ষতা ও গবেষণাভিত্তিক ব্যাংকিং এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানান ডিসিসিআই সভাপতি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে এশিয়া অঞ্চলের উন্নয়শীল দেশগুলোর পণ্যের রফতানি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের নিচে। তবে ২০১৪ সালে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে মোট বৈদেশিক বিনিয়োগের অর্ধেকের বেশি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে হয়। তবে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের উন্নয়নশীল দেশগুলো ৩৩ শতাংশের ওপর বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সমর্থ হয়েছে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আমদানি-রফতানি কাজের প্রতিবন্ধকতা ও সমুদ্রবন্দর সংক্রান্ত সেবার মানদণ্ড তুলনা করার লক্ষ্যে রিপোর্টে একটি সূচক অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যা এসকাপ ইন্টারন্যাশনাল সাপ্লাই চেইন কানেক্টিভিটি ইনডেক্স নামে পরিচিত। এ সূচক অনুযায়ী ১৭৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৭তম।
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট (বিএফটিআই) সিনিয়র ফেলো মুহম্মাদ আবু ইউসুফ, মুজিবুর রহমানসহ ডিসিসিআই নেতারা।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্যবসাবান্ধব দেশের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার বিকল্প নেই। দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা না থাকার কারণে ব্যবসায়িরা বিপাকে পড়েন। তাই আন্তর্জাতিক যোগাযোগ রক্ষাকারী রাস্তাগুলোকে হরতালের আওতামুক্ত রাখার জন্য রাজনীতিবিদের প্রতি অনুরোধ জানান।
তাছাড়া প্রতিবেদন পর্যালোচনায় বক্তারা বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ৫০টি সদস্য রাষ্ট্র সমানভাবে কৃতিত্ব দেখাতে পারছে না। প্রতিবেদন সেবা ও চায়না সেক্টরকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এখানে তৈরি পোশাক খাতে ভিয়েতনামকে এগিয়ে দেখানো হয়েছে। পোশাক খাতে বাংলাদেশের বিনিয়োগ বেশি থাকলেও রাজনৈতিক অস্থিরতা, আমেরিকার অগ্রধিকারমূলক বাণিজ্যিক সুবিধা (জিএসপি) বাতিল, ইউরোপীয় জিএসপি নিয়ে শঙ্কাসহ নানা কারণ দেখিয়ে দেশটিকে পেছনে রাখা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই সভাপতি মো. সবুর খান বলেন, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন বিনিয়োগ ও লেনদেন বৃদ্ধি। আর এজন্য রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীলতার পাশাপাশি প্রয়োজন শ্রমিকদের উপযুক্ত কর্ম পরিবেশ, প্রযুক্তির উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ পলিসিগত উন্নয়ন।