সমঝোতায় পৌঁছেছে তেহরান ও ছয় জাতি
শেষ পর্যন্ত ইরানের পরমাণু ইস্যুতে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে ছয় জাতিগোষ্ঠী ও তেহরান। ইরানের পরমাণু আলোচক দলের প্রধান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ রোববার ভোররাতে জেনেভা আলোচনার পঞ্চম দিনের শুরুতে এ খবর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, টানা পাঁচদিনের কঠিন আলোচনার পর অবশেষে সমঝোতা অর্জিত হয়েছে এবং পাশ্চাত্য ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধ করার অধিকার মেনে নিয়েছে।
জেনেভা থেকে আমাদের সংবাদদাতা জানিয়েছেন, ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের সমঝোতা অনুযায়ী, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণসহ তার সব পরমাণু তত্পরতা চালিয়ে যেতে পারবে। সেইসঙ্গে নাতাঞ্জ, ফোরদো ও আরাক পরমাণু স্থাপনার কাজ বর্তমান ধারায় এগিয়ে যাবে। অন্যদিকে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের ওপর আর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে না। পাশাপাশি বিদেশে আটকে পড়া ৪২০ কোটি ডলারের সমপরিমান অর্থ দেশে আনতে পারবে তেহরান। বার্তা সংস্থা এএফপি অবশ্য এই অর্থের পরিমান ৭০০ কোটি ডলার বলে উল্লেখ করেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা ক্যাথেরিন অ্যাশ্টোন ও ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরা ফ্যাবিয়াস’সহ ছয় জাতিগোষ্ঠীর পদস্থ কর্মকর্তারা ইরানের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ছাড়া, ক্যাথেরিন অ্যাশ্টোনের মুখপাত্র মাইকেল ম্যানও ইরানের পরমাণু ইস্যুতে সমঝোতার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, কয়েক দফা অত্যন্ত কঠিন ও শ্বাসরুদ্ধকর আলোচনার পর এ সমঝোতা অর্জিত হয়েছে। এমন সময় জেনেভায় এ সমঝোতা অর্জিত হলো যখন কয়েক ঘন্টা আগে শনিবার মধ্যরাতে দু’পক্ষ নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য থেকে যাওয়ার কথা উল্লেখ করছিল। কিন্তু টানা আলোচনায় সেসব মতপার্থক্য নিরসন হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।
এর আগে শনিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরমাণু আলোচক দলের সদস্য সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি জেনেভায় সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, আলোচনা সঠিক পথে এগুচ্ছে। শতকরা ৯৮ ভাগ ক্ষেত্রে সমঝোতা হয়েছে- উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, কয়েকটি ছোটখাটো বিষয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে। এ ছাড়া, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ ছয় জাতিগোষ্ঠীর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠকের পর বলেছিলেন, যেকোন সমঝোতায় ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার মেনে নিতে হবে।
জেনেভায় ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের সর্বশেষ পরমাণু আলোচনা গত বুধবার শুরু হয়। টানা তিনদিন আলোচনার পর শুক্রবার রাতে জাতিসংঘের পাঁচ স্থায়ী সদস্যদেশ ও জার্মানীর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অনির্ধারিত সফরে জেনেভা যেতে শুরু করেন। তাদের এ সফর থেকেই একটি সমঝোতার সম্ভাবনা সম্পর্কে আঁচ করা গিয়েছিল।