শর্তসাপেক্ষে আফিয়াকে হস্তান্তরে রাজি হয়েছে আমেরিকা
মার্কিন সরকার অবশেষে তাদের হাতে অপহৃত পাকিস্তানি নারী আফিয়া সিদ্দিকিকে ইসলামাবাদের কাছে হস্তান্তর করতে সম্মত হয়েছে। ওয়াশিংটন ইসলামাবাদকে বলেছে, পরস্পরের কিছু বন্দি বিনিময়ের শর্তে আফিয়াকে হস্তান্তর করা হবে। এ ছাড়া, সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন সরকার আরো বলেছে, পাকিস্তানকে আমেরিকার একটি আদালতের নির্দেশ মেনে চলতে হবে। ওই নির্দেশে আফিয়াকে সন্ত্রাসবাদের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মার্কিন সরকার বলেছে, আফিয়াকে পাকিস্তানে তার কারাদন্ডের মেয়াদ শেষ করতে হবে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন প্রস্তাব খতিয়ে দেখার জন্য একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে এবং বন্দি বিনিময় সংক্রান্ত এ চুক্তি শিগগিরই স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে জানা গেছে। মার্কিন আদালতে আফিয়া সিদ্দিকির বিরুদ্ধে কিছু ভুয়া অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি ২০০৮ সালের জুলাই মাসে আফগানিস্তানের একটি থানায় একজন মার্কিন সেনার বন্দুক কেড়ে নিয়ে একদল এফবিআই এজেন্টের ওপর গুলী চালাতে গিয়েছিলেন। আফিয়ার এ পদক্ষেপকে সন্ত্রাসবাদ আখ্যা দিয়ে তাকে ৮৬ বছরের কারাদ- দিয়েছে আমেরিকার একটি আদালত। তবে আদালতে নিজের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আফিয়া সিদ্দিকি। তবে আফিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল মহল এবং তার আইনজীবীরা বলে আসছেন, ২০০৪ সালে তাকে পাকিস্তান থেকে অপহরণ করে মার্কিন গোয়েন্দারা। আফিয়া সিদ্দিকিও আদালতে বলেছেন, মার্কিনবাহিনী বন্দুকের মুখে তাকে পাকিস্তান থেকে অপহরণ করেছে। এছাড়া, তার আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, আফিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ না থাকার পরও আদালত তাকে দোষি সাব্যস্ত করেছে। মার্কিন গোয়েন্দাদের নির্যাতনের কারণে তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।আফিয়াকে আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের কারসওয়েলের কুখ্যাত ফেডারেল মেকিকেল সেন্টার বা এফএমসি’তে রাখা হয়েছে। সেখানকার একটি নির্জন সেলে বন্দি রাখা হয়েছে তাকে। পাকিস্তানে আফিয়ার মুক্তির দাবি একটি জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তানসহ বিশ্বের বহু দেশে আফিয়ার মুক্তির দাবিতে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন।