প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সফর করলেন বিবিসিসির প্রতিনিধি দল

BBCCবিশ্বের অভিভাবক সংস্থা জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো সফর করলেন বৃটিশ বাংলাদেশী একটি প্রতিনিধি দল। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে এম মোমেনের আমন্ত্রণে এ সফর করেন যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সংগঠন বৃটিশ-বাংলাদেশ চেমবার অব কমার্সের নেতৃবৃন্দরা। এক সপ্তাহের সফরে তারা জাতিসংঘ ও নিউইয়র্কের বেশ কয়েকটি গুরুত্ব সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। সেখানে বাংলাদেশ, দেশের ব্যবসা বাণিজ্য, শিক্ষা ও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রবাসীদের নানা সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
পৃথক পৃথক এসব আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় রাস্ট্র। দেশের উন্নয়নের মূলশ্রুতে প্রবাসীদের সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে তারা জোর তাগিদ দেন। জাতিসংঘের প্রতিনিধির পক্ষ থেকে  অবহিত করা হয়, জাতিসংঘে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরবরাহকারীরা রেজিস্টার্ড থাকলেও এই তালিকায় কোনো বাংলাদেশী সরবরাহকারী নেই। এমনকি তরুন ব্যবসায়ী ও উদ্যেক্তাদের কোন সুনির্দিস্ট তালিকা নেই জাতিসংঘে। এমনকি জাতিসংঘে পেশাগত দিক দিয়ে তরুণদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। এ জন্য তিনি জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে চাকুরী ও ব্যবসার ব্যাপারের খোঁজ নেওয়ার অনুরোধ জানান।
গত ১২ নভেমবর লন্ডন থেকে প্রতিনিধি দল জাতিসংঘের উদ্দেশ্য নিউইয়র্ক পৌছান। বৃটিশ বাংলাদেশ চেমবার অব কমার্সের ১১ সদস্যের  প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট মুকিম আহমদ, সাবেক সভাপতি ও প্রতিনিধিদলের নেতা শাহাগীর বখত ফারুক, ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর ও প্রতিনিধি দলের উপনেতা মুহিব চৌধুরী, ডাইরেক্টর বশির আহমেদ, নর্থ ইস্ট রিজিওনের সভাপতি মাহতাব মিয়া, ডাইরেক্টর শফিকুল ইসলাম, ডাইরেক্টর রফিক হায়দার, ডাইরেক্টর আলী মোহাম্মদ জাকারিয়া, ওমেন এন্টারপ্রেণার্সের সভানেত্রী দিলারা খান , ওমেন এন্টারপ্রেণার্সের ডাইরেক্টর পলি ইসলাম ও লন্ডন টাইগার্সের চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মেসবাহ আহমদ।
জাতিসংঘ সফরকালে ১৩ নভেমবর সকালে প্রতিনিধি দল সাক্ষাত করেন ইউনিসেফের শিক্ষা বিভাগের প্রধান জোসেপিনি বুর্নির সাথে। প্রায় ২ ঘন্টাব্যাপী এই আলোচনায় উঠে আসে বাংলাদেশের শিক্ষার উন্নয়নে একটি যৌথ প্রজেক্ট বাস্তবায়ন নিয়ে। দুপুরে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. একে আব্দুল মোমেন এর সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ১৪ নভেম্বর সকালে জাতিসংঘে বৃটিশ স্থায়ী মিশনের প্রধান স্যার মার্ক লয়াল গ্র্যান্টের সাথে সৌজন্য শুভেচ্ছা বিনিময় করেন, বিকেলে বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরীর সাথে এক সেমিনারে যোগ দেন। পরদিন জাতি সংঘের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের সাথে মতবিনিময় করেন। সন্ধ্যায় জাকসন হাইটস বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন (জেবিবিএ) এর সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রতিনিধি দল ১৫ নভেম্বর অপরাহ্নে জাতিসংঘ ভবনে ইউএস, ইউকে ও বাংলাদেশ এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধির সাথে পার্টনারশীপ ডায়ালগে অংশ গ্রহণ ছাড়াও সন্ধ্যায় কমিউনিটি ডিনারে অংশ নেন।
এদিকে বৃটেন থেকে বাংলাদেশী একটি প্রতিনিধি দল জাতিসংঘে এসেছেন এমন খবর পেয়ে নিজের সদিচিছয়া এসে সাক্ষাত করেন জাতিসংঘ ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব । তিনি এ সময় প্রতিনিধি দলকে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে স্বাগত জানিয়ে এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি এ সময় বাংলাদেশ নিয়ে তার স্মৃতি চারন করতে গিয়ে বলেন, তিনি এক সময় বাংলদেশে কাজ করেছেন। নিজেকে একজন সাধারন পরিবারের সন্তান দাবী করে, পুরো পৃথিবীকে একটি গ্লোভাল ভিলেজ হিসেবে দেখতে চান বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
নিউইয়র্কে মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠান
নিউইয়র্ক সফররত বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স’র প্রতিনিধিদল ১৭ নভেমবর মিট দ্যা প্রেস- অনুষ্ঠানে মিলিত হন নিউইয়র্কের বাংলা মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সাথে। মতবিনিময়কালে তারা এনআরবি ডে প্রতিষ্ঠার দাবী জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের। এরপর বিবিসিসি’র প্রতিনিধিদলের নেতা শাহাগির বখত ফারুক তাদের জাতিসংঘ তথা নিউইয়র্ক সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং প্রতিনিধিদলের সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন।
অনুষ্ঠানে শাহাগির বখত ফারুক জানান, ১৯৯১ সালে অর্থাৎ ২২ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত বিবিসিসি‘র বর্তমান পরিচালকের সংখ্যা ৩১ জন। এটি একটি অরাজনৈতিক এবং সকল ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্বমূলক সংগঠন।
তিনি বলেন, বৃটেনের দীর্ঘ প্রবাস জীবনে আমাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা, নেটওয়ার্কিং, কানেকটিং প্রভৃতিকে আমরা বাংলাদেশের কাজে লাগাতে চাই। আমরা বাংলাদেশী পণ্য বৃটেনে বাজারজাত করছি। বিবিসিসি’র পরিচালকসহ বৃটিশ-বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা দেশে বিনিয়োগ করছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে এম মোমেনের সার্বিক সহযোগিতায় জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরামে মতবিনিময়ের ফলে পার্টনারশীপে কাজ করার সুযোগ ঘটবে বলে বিশ্বাস করি। জাতিসংঘের গ্লোবাল পার্টনারশীপ ফোরাম পার্টনারশীপে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button