লাটভিয়ায় ভবনধসের পর সরকার পতন!
লাটভিয়ার রাজধানী রিগার একটি বিপণিবিতান ধসে ৫৪ জনের মৃত্যুর ঘটনার দায়ভার নিয়ে গতকাল বুধবার পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ভালদিস দমব্রভস্কিস। একই সঙ্গে তিনি তাঁর মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়েছেন। ইউরোজোনে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে এ ঘটনা ঘটল।
প্রেসিডেন্ট আন্দ্রিস বেরজিনেসের সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রী তাঁর পদত্যাগের ঘোষণা দেন। পরে দমব্রভস্কিস সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিপর্যয় এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের মনে হয়েছে, এখন একটি নতুন সরকার প্রয়োজন, যার প্রতি পার্লামেন্টের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’
২১ নভেম্বর ম্যাক্সিমা সুপার মার্কেটের ভবন ধসে অন্তত ৫৪ ব্যক্তি প্রাণ হারায়। প্রেসিডেন্ট বেরজিনেস এ দুর্ঘটনাকে ‘হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিহিত করে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ঘটনা তদন্তের আহ্বান জানান।
দমব্রভস্কিস গতকাল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। বার্তা সংস্থা প্রেসিডেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ‘যাঁরা ভবিষ্যতের কথা ভাবেন তাঁদের সবাইকে অনুরোধ করছি, নিজ নিজ দায়িত্ব বুঝে নিয়ে সে অনুযায়ী কাজ করুন।’
প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র বলেন, ‘সরকার দুর্ঘটনার রাজনৈতিক দায়দায়িত্ব স্বীকার করে নিয়েছে।’
পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ভবন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিপণিবিতানটির নকশা ঠিকভাবে করা হয়নি। এর ছাদে যে বাগান করা হয়েছিল, সেটির ভারে ভবনটি ধসে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভবন নির্মাণে মানসম্মত উপকরণ ব্যবহূত হয়নি।
প্রেসিডেন্ট বেরজিনেস প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে পারেন, আবার ফিরিয়েও দিতে পারেন। গ্রহণ করলে তিনি নতুন কাউকে সরকার গঠনের আহ্বান জানাবেন। ২০১৪ সালের অক্টোবরে এ সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর লাটভিয়া স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে যাত্রা শুরু করে। গত কয়েক দশকে এটিই দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
গত এক বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে ভবনধসে কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।