২০১৪ সালে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা নিয়ে গণভোট
ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য ছেড়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্কটল্যান্ড আত্মপ্রকাশ করবে কি-না, আগামী বছর এক গণভোটে সেখানকার মানুষ তা স্থির করবেন। এমন পদক্ষেপের পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তিতর্ক বেড়েই চলেছে। একদিকে ইউরোপীয় সমন্বয় প্রক্রিয়া, অন্যদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদ। স্পেন, বেলজিয়ামসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে এমন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এবার ব্রিটেনের পালা। স্কটল্যান্ড ব্রিটেন থেকে আলাদা হতে ২০১৪ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর মাসে গণভোটের আয়োজন করতে চলেছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ স্বাধীনতার সপক্ষে রায় দিলে ২০১৬ সালের ২৪শে মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন দেশ হিসেবে আÍপ্রকাশ করতে চায় স্কটল্যান্ড। অর্থাৎ প্রায় ৩০৬ বছর ধরে একসঙ্গে থাকার পর যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা হয়ে যেতে পারেন স্কটিশরা। উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সাল থেকেই স্কটল্যান্ডের নিজস্ব সংসদ রয়েছে, যেখানে প্রাদেশিক আইন প্রণয়ন করা হয়। স্বাধীনতা পেলে স্কটল্যান্ড কেমন দেশ হবে? খোদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন স্কটিশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছেন, তাদের কোনো স্পষ্ট পরিকল্পনাই নেই। ৬৭০ পৃষ্ঠার ব্লু-প্রিন্টে শুধু বিচ্ছিন্নতার কথা বলা হয়েছে। ক্যামেরনের মতে ভবিষ্যৎ মুদ্রা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর মতো জোটে স্বাধীন স্কটল্যান্ডের ভূমিকা অনিশ্চিত। তাছাড়া স্বাধীন হলে স্কটল্যান্ডের মানুষকে এক ধাক্কায় অনেক বেশি কর দিতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
ব্রিটেনের তিন প্রধান জাতীয় রাজনৈতিক দল স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার বিরোধী। তাদের মতে, ৫০ লাখ মানুষেরও কম জনসংখ্যার একটি দেশের পক্ষে সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা সহজ হতে পারে না। লেবার পার্টির স্কটিশ নেতা আনাস সারওয়ার মনে করেন, স্বাধীনতার যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা মিথ্যা প্রতিশ্র“তিতে ভরা। স্কটল্যান্ডের জাতীয় পার্টি এসএনপি-এই উদ্যোগের মূল কাণ্ডারি। দলের নেতা অ্যালেক্স স্যালমন্ড মনে করেন, এমন ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিলে স্কটল্যান্ডে সমৃদ্ধি অনেক বেড়ে যাবে। তিনি চান, স্কটল্যান্ড ইইউ ও ন্যাটোর সদস্য হোক। এমনকি মুদ্রা হিসেবে পাউন্ড রেখে দেয়ারও পক্ষে তিনি। তবে ব্রিটিশ সরকার মনে করে, এমনটা কার্যক্ষেত্রে সম্ভব হবে না। অর্থাৎ ব্রিটেন ও স্বাধীন স্কটল্যান্ডের মধ্যে কারেন্সি ইউনিয়ন-এর সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে করছে ক্যামেরনের প্রশাসন।