নির্বাচনে যাচ্ছে না জাতীয় পার্টি
নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেছেন, সব দল নির্বাচনে আসেনি তাই আমি নির্বাচনে যাচ্ছি না। তিনি প্রার্থীদের জমা দেয়া মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারেরও নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার দুপুরে বনানীর দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনের সময় তাঁর সঙ্গে দলের আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
প্রার্থীদেরও নির্বাচন থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে এরশাদ বলেন, প্রার্থীদের মনোয়নপত্র তুলে নেয়ার কথা বলেছি। আবার নির্বাচনের পরিবেশ হলে তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন।
তবে সর্বদলীয় সরকারে জাতীয় পার্টির উপদেষ্টা-মন্ত্রীরা থাকছেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে পরে জানাব।
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, আমি বলেছিলাম সব দল নির্বাচনে না গেলে আমি নির্বাচনে যাব না। বলেছিলাম, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরাপদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আমরা নির্বাচনে থেকে যাব। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হলো। এখন দেশের অনিশ্চিত গন্তব্য কোথায় গিয়ে থামবে, তা শুধু সর্বশক্তিমান আল্লাহই ভালো জানেন।
সাংবাদিকের তিনি বলেন, তোমরা আমাকে বিদ্রুপ করো, বলো, এরশাদ সকালে এক কথা, বিকেলে এক কথা বলে। তোমাদের বুঝতে হবে। আমি না থাকলে দল থাকে না। জেলে গেলে দলের অস্তিত্ব থাকে না। আমাকে অনেক কিছু ভাবতে হয়।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে তাকে এক হাজার কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব, মামলার ভয় দেখানো, গাজীপুর নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল ইত্যাদি নানা বিষয়ের অবতারণা করেন।
তিনি বলেন, রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব দিলেই তাকে মামলা-জুলুম থেকে নিস্তার দেয়া হতো।
তিনি বলেন, আমি শৃংখলিত রাজনীতিবিদ। শৃংখলমুক্ত হয়ে বাঁচতে চাই।….আমি না থাকলে দল চলে না। আমার দুর্বলতা আমি একজন বিকল্প চেয়ারম্যান তৈরি করতে পারিনি।
এরশাদ বলেন, লোকে বলে, আমাকে নাকি এক হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। তাহলে এখন আমি এ সিদ্ধান্ত কি করে নিলাম? তিনি মঞ্জুর হত্যা মামলায় তাকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, মেজর জেনারেল মঞ্জুর হত্যার জন্য আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ঘটনার ১৪ বছর পর। কোনো মামলায় যখন আমাকে আটকানো যাচ্ছিল না, তখন মঞ্জুর হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলা আজ ১৮ বছর ধরে চলছে। ১৩ জন বিচারক বদল হয়েছেন। আমি ভেবেছিলাম রায় পাব। অধিকতর শুনানির জন্য ২১ জানুয়ারি দিন ঠিক করা হয়েছে। তার মানে আমাকে আবার ঝুলিয়ে রাখা হলো।
দল থেকে বহিষ্কৃত জ্যেষ্ঠ প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমদকে উদ্দেশে এরশাদ বলেন, অনেকে দল থেকে চলে গেছেন, তাদের আমি ফিরে আসার অনুরোধ জানাই।