টানা অবরোধে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা : ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও গত দু’সপ্তাহের দীর্ঘ অবরোধের কবলে পড়ে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতি।
টানা অবরোধের কারণে পরিবহন সংকটে পড়ে গ্রাম থেকে মাছ, তরি-তরকারি, শাক-সবজি সংগ্রহ করা এবং তা মোকাম থেকে অন্যত্র সরবরাহ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে, উৎপাদক চাষী, পাইকারী ক্রেতা, আড়তদার সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এ দিকে, এ সব নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন করতে গিয়ে যানবাহনের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে সরবরাহকারীদের। শহরের বা দূরবর্তী জেলার ভোক্তারাও সরবরাহ সংকটের কারণে বাজারে বেশি মূল্য দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
চাষী পর্যায়ে ক্ষতির কথা জানিয়ে পাবনা জেলার উল্লাপাড়ার আল-আমিন রেডিও তেহরানকে বলেন, তারা সবজি উৎপাদনের দামটাও এখন পাচ্ছেন না। কারণ, বাজারে এখন পাইকারী ক্রেতারা আসছে কম।
নরসিংদীর মাছ চাষী সুমন জানালেন- তার কয়েক টন মাছ পুকুরে পড়ে আছে। পরিবহন সংকটের কারণে বাজার দর কমে গেছে।
কুমিল্লার নিমসার এলাকার সবজি চাষীদের সমবায় নেতা মো. মোবারক জানালেন, তার এলাকায় শীতকালে প্রচুর সবজি ফলেছে কিন্তু তারা দাম পাচ্ছেন না।
অন্যদিকে, সিলেটের পাইকারী সবজি বাজারের আড়তদার রাজু অ্যান্ড ব্রাদার্স-এর মালিক মো. দবির মিয়া জানালেন, তাদের এলাকায় মূলত উত্তরবঙ্গ থেকে সবজি সরবরাহ আসে। কিন্তু পরিবহন সংকটের কারণে মালামাল কম আসায় স্থানীয় বাজারে সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া, দ্বিগুণ-তিনগুণ ট্রাক ভাড়া দিয়ে কিছু সরবরাহ আসলেও তার দাম বেশি পড়ছে এবং তাও আবার আড়ত থেকে নিতে আসার মতো পাইকার জুটছে না।
এ অবস্থায় অবরোধ বা হরতাল পরিস্থিতি আরো বেশিদিন চললে কৃষি পণ্যের বাজার ব্যবস্থা পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে যাবে। উৎপাদক চাষীরা মাঠে মারা যাবে। আর শহুরে ক্রেতারা তাদের বাজার তালিকায় সবজির কোটা কমিয়ে দিতে বাধ্য হবেন।