এরশাদ নিখোঁজ !
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তিনি কোথায় আছেন, কি অবস্থায় আছেন, তানিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক কৌতুহল। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণার আট ঘন্টার মাথায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, এরশাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। দলীয় নেতা-কর্মী বা ঘনিষ্ঠরাও বলতে পারছেন না তিনি কোথায় অবস্থান করছেন। এরশাদের ব্যাক্তিগত সহকারী, প্রেস সচিব বা দলের দায়িত্বশীল কোনো নেতাও বলতে পারছেন তা সঠিক অবস্থান। এছাড়া তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে। এরশাদের খোঁজ-খবর রাখেন এমন সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলেও কোনো ধরনের তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি তার বাসার লোকজনও কোনো হদিস দিতে পারছেন না।
এরশাদের এক ঘনিষ্ঠ সূত্রের মতে, ঢাকায় অবস্থান করলে তিনি সম্ভাব্য ৪টি স্থানে থাকতে পারেন। স্থানগুলো হলো – বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসভবন, স্ত্রী রওশন এরশাদের গুলশানের বাসা, গুলশান ক্লাব, ডিওএইচএস ক্লাব।
এছাড়া মাঝে মাঝে বনানীস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়, কাকরাইলস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সময় কাটান তিনি। কিন্তু সম্ভাব্য এসব কোনো স্থানেই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না এরশাদের। তার ঘনিষ্ঠদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা তেমন কোনো তথ্য দিতে পারছেন না।
এবিষয়ে এরশাদের ব্যক্তিগত সহকারি মেজর (অব.) খালিদ জানান, স্যার যেখানে আছেন, ভালোই আছেন। আগামী কাল তাকে পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, স্যার নিজেই একটু দূরে সরে আছেন। বাসায় অনেক লোকজন ভিড় করবে তাই তিনি বাসায় আসেননি।
এদিকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান ট্যাপা জানান, রাত পৌনে আট পর্যন্ত এরশাদ বাসায়ই অবস্থান করছিলেন। এর পরে তিনি একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করার জন্য বাইরে যান। সাড়ে আটটায় আবারো বাসায় ফেরেন। বর্তমানে তিনি প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায়ই আছেন।
ব্যক্তিগত এবং প্রেস সচিবের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন লোক তাকে ফোন করার কারণে স্যারের (এরশাদ) তিনটি মোবাইলই বন্ধ করে রেখেছেন। তবে বিশেষ একটি মোবাইল খোলা আছে। সেটির মাধ্যমে তিনি খুব কাছের লোকদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন।
এরশাদ ঘনিষ্ঠ অপর একটি সূত্র জানায়, নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সরকারের রোষানলে পড়তে পারেন তিনি। তাই এই মুহূর্তে গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি। ওই সূত্রটি জানায়, তিনি এশিয়ার একটি প্রভাবশালী দেশের ঢাকাস্থ দূতাবাসে অবস্থান করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের একজন প্রভাশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণার পর পরই স্যারের মোবাইলে একটি ফোন আসে। এরপর দ্রুত সংবাদ সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন তিনি। এসময়ের পর থেকে এরশাদের খোঁজ মিলেনি। এরশাদের এই খোঁজ না মেলাকে রহস্যজনক মনে করছেন দলের অনেক নেতাই। সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ তার ওপর চাপের কথা খোলামেলাভাবে বলেন।
এদিকে এরশাদের গা ঢাকা দেয়ার খবর প্রচারিত হওয়ার পর ঢাকার সংবাদ মাধ্যমগুলোতে উৎসুক নগরবাসীর ফোন কল আসতে থাকে। সবাই জানতে চান এরশাদ আসলে কোথায়। তিনি কি নতুন কোনো চমক সৃষ্টির রিহার্সেল দিচ্ছেন?