আইসিসির সবুজ সংকেত পেল সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম
মিজান আহমদ চৌধুরী: সকল জল্পনার কল্পনার অবসান গঠিয়ে অবশেষে আইসিসির সবুজ সংকেত পেল সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম । বার বার নির্মান ও সংস্কার কাজের জন্য আইসিসির কাছ থেকে বাড়তি সময় চেয়ে নিয়ে এখন ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভেন্যু হিসেবে আইসিসির ভেন্যু পরিদর্শক দল সন্তোষ হলো।
প্রাকৃতিক সৌন্দ্যর্যে মধ্যে চারদিকে সবুজ বৃক্ষরাজি, উঁচু টিলায় আর চা বাগানের ভেতরে গড়ে উঠা বিশ্বে অন্যতম সৌন্দর্যময় ক্রিকেট ভেন্যু সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম চূড়ান্ত পরিদর্শনে বৃহস্পতিবার দুপুর ২.৩০ মিনিটে আইসিসি ভেন্যু পরিদর্শক দল আসে । আইসিসির ইভেন্ট ম্যানেজার ক্রিস টেটলি নেতৃত্বে সাত সদস্যের দলে ছিলেন আইসিসির নিরাপত্তা, গ্রাউন্ড ও মিডিয়া বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা ।
বার বার নির্মান ও সংস্কার কাজের জন্য আইসিসির কাছ থেকে বাড়তি সময় চেয়ে নিয়ে এখন ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভেন্যু হিসেবে প্রস্তুত স্টেডিয়ামটি,যা দেখে অনেকটা অভাক পরিদর্শক দলটি । আগের আইসিসির পরিদর্শনে তাদেরকে সন্তোষ করা না গেলে ও এবার সবাই আগে থেকে অনেকটা ধরে নিয়েছিলেন যে তারা সন্তোষ হবে ।
স্টেডিয়ামে এসে পরিদর্শক দল কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন গ্যালারি, গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড, গ্রিন গ্যালারি, ইলেকট্রনিক স্কোর বোর্ড, সাইটস্ক্রিন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা,মিডিয়া সেন্টার, টিভি প্রোডাকশন রুম, পোস্ট ব্রিফিং রুম, জার্নালিস্ট লকার , জার্নালিস্ট লাউন্স, হসপিটালিটি বক্স, ফ্লাডলাইটসহ অন্যান্য । এ সময় আইসিসি ভেন্যু পরিদর্শক দলের সাথে ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা । জানা গেছে ,সব ভেন্যু পরিদর্শন শেষে আইসিসি পরিদর্শন দলটি ঢাকায় বিসিবির সঙ্গে আলোচনায় বসবে ।
আইসিসির ইভেন্ট ম্যানেজার ক্রিস টেটলী স্টেডিয়াম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, আমরা স্টেডিয়ামের কাজ দেখে সন্তোষ । যেহেতু আইসিসি এই স্টেডিয়ামের জন্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টিকেট বিক্রি করে দিয়েছে ,সেহেতু এই স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ না হওয়া নিয়ে কোন সংশয় নেই । আমরা যে রিপোর্ট পাঠাবো সেই রিপোর্ট থেকে চূড়ান্ত সিক্থান্ত আসবে ।
বিসিবির পরিচালক মাহবুবুর আনাম বলেন, আইসিসি ভেন্যু পরিদর্শক দল স্টেডিয়াম দেখে সন্তোষ । সামান্য যে কাজ বাকী রয়েছে তা সমস্যার নেই বিশ্বকাপ ভেন্যু জন্য । তিনি আর বলেন, বিশ্বকাপ আগে এই স্টেডিয়াম বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার একদিনের একটি ম্যাচ হবে এই স্টেডিয়ামে ।
এদিকে জানা গেছে ,এটা তাদের শেষ পরিদর্শন বলে কোন কথা নেই। প্রয়োজন হলে আবার পরিদর্শনে আসতে পারবেন তারা । এখন থেকে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ পর্যন্ত ঢাকায় আইসিসির একটি অফিস থাকবে। যেখানে আইসিসির দুই একজন কর্মকতা সব সময়ই থাকবেন।
এদিকে ২০১৪ টি ২০ বিশ্বকাপের অন্যতম ভেন্যু সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম তৈরি করা হচ্ছে প্রকৃতির অপরূপ সাজে। চারদিকে সবুজে ঘেরা মাঠে থাকছে দেশের প্রথম গ্রিন গ্যালারি। যা দেশের অন্য কোনো স্টেডিয়ামে নেই। সরেজমিনে স্টেডিয়াম পরিদর্শন করে দেখা গেছে, বদলে গেছে পুরো দৃশ্যপট। গ্যালারিতে ১৪ হাজার লাল- সবুজ চেয়ার বসানো হয়েছে। পুরনো মিডিয়া ভবন বদলে টেলিভিশন আকৃতির রূপ দেয়া হয়েছে। পাঁচতলা বিশিষ্ট মিডিয়া সেন্টারের প্রথম তলায় টিভি প্রোডাকশন রুম, পোস্ট ব্রিফিং রুম, জার্নালিস্ট লকার ও জার্নালিস্ট লাউন্স থাকবে। দ্বিতীয় তলায় ডাইনিং লাউন্স, তৃতীয় তলায় প্রেস বক্স, চতুর্থ তলা রাখা হচ্ছে রেডিও ও টিভি ধারাভাষ্যকারদের জন্য। স্টেডিয়ামের পশ্চিম পাশে চারতলা বিশিষ্ট গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডের কাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে। গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডের চারতলায় থাকছে হসপিটালিটি বক্স। ফ্লাড লাইট বসানো ও বিদ্যুৎ সাব স্টেশন প্রস্তুত । মাঠের উত্তর-পশ্চিম পাশে বসানো হয়েছে স্কোরবোর্ড। বিপরীত কোণে থাকছে জায়ান্ট স্ক্রিন। গ্রিন গ্যালারির কাজ কিছুটা বাকি। কয়েক স্তরবিশিষ্ট মাটির তাক তৈরি করা হয়েছে। সেখানে লাগানো হবে সবুজ বৃক্ষরাজি। স্টেডিয়ামের পশ্চিম পাশে টিলার উপর তৈরি হচ্ছে এই গ্যালারি। দুই হাজার আসনবিশিষ্ট গ্রিন গ্যালরির উপরে থাকবে একটি কফি হাউস। দৃষ্টিনন্দন এ গ্রিন গ্যালারির কল্যাণে বিশ্বের শীর্ষ কয়েকটি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের পাশাপাশি জায়গা করে নেবে সিলেটবাসীর স্বপ্নের এই স্টেডিয়ামটি। স্টেডিয়াম ঘেঁষা নয়নাভিরাম চা বাগানের সবুজের সমারোহও বাড়তি আনন্দ জোগাবে দর্শকদের। ফলে সিলেট স্টেডিয়াম হবে বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি স্টেডিয়াম।