প্রতিবাদী জনতাকে হত্যার অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার হবে : সেইভ বাংলাদেশ
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকারকে ইতিহাসের নিশৃষ্ঠ মানবতাবিরোধী সরকার আখ্যায়িত করে লন্ডনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে কোন অত্যাচারী শাসকের পরিণতি শুভ হয়নি। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের আলেম-উলামা, নিরীহ, প্রতিবাদী জনতার উপর গুলি চালানোর অপরাধে একদিন তার বিচার হবেই।
গত ৩ ডিসেম্বর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেইভ বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে রাজনীতিবীদ, কমিউনিটি সংগঠন, আইনজীবী, সাবেক ছাত্রনেতা সহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বিশিষ্ট আইনজীবী সেইভ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মাওলানা আবুল হাসনাত চৌধুরী ও মাহিম মজুমদারের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিশিস্ট ইসলামী চিন্তাবিদ জমিয়তে উলামা ইউরোপের আমির আল্লামা মুফতি শাহ সদর উদ্দিন, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শাইস্তা চৌধুরী কুদ্দুস, বিশিষ্ট টিভি প্রেজেন্টার আজমল মশরুর, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক আহবায়ক এম এ মালেক, জামায়াতে ইসলামীর ইউরোপের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা,খেলাফত মজলিস ইউকের আমির অধ্যাপক আব্দুল কাদির সালেহ, যুক্তরাজ্য বিএনপির সেক্রেটারী কয়সর এম আহমেদ, বিশিস্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা রেজাউল করিম, যুক্তরাজ্য সফররত গোলাপগঞ্জ ফুলবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান সাহান, মাওলানা আব্দুল মোমিন প্রমূখ।
বক্তারা বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সর্বদলীয় সরকারের নামে সরকার বাকশাল কায়েমের অপচেষ্ঠা চালাচ্ছে। প্রধান বিরোধীদলকে বাহিরে রেখে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূলবোধকে ধ্বংস করে ইসলাম বিরোধী অপশক্তিকে ক্ষমতার মসনদে বসাতে ভারতীয় দুস্কৃতিকারীরা গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বক্তারা শেখ হাসিনাকে হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষের। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোটের কাঁটাছেড়া সংবিধানে সকল ক্ষমতা একমাত্র শেখ হাসিনার। তাই সংবিধানে যে সরকারের নাম নিশানা নেই তেমন ‘সর্বদলীয়’ সরকারের নামে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্ঠা চালাচ্ছে।
বক্তারা নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন মেনে নেয়া হবে না উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, জোর করে ক্ষমতায় থাকার জন্যগুলি করে মানুষ হত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিচার বাংলার মাটিতে হবেই।
জমিয়তে উলামা ইউরোপের আমীর আল্লামা মুফতি শাহ ছদর উদ্দিন নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, নিরীহ আলেম উলামাকে রাতের অন্ধকারে বাতি নিভিয়ে হত্যা করেছেন। যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে আল্লামা সাঈদী, মাওলানা নিজামী সহ শীর্ষ ইসলামী নেতৃবৃন্দকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন। জনগণের করের টাকায় লালিত পুলিশ বাহিনী দিয়ে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। মুফতি ছদর উদ্দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা অবৈধ শেখ হাসিনার সরকারের হুকুমে নিরীহ জনতাকে হত্যা করবেন না। গুলি চালিয়ে রক্ত ঝরানোর অপরাধে নয়তো একদিন আপনাদের বিচারের মুখোমুখী হতে হবে।
টিভি প্রেজেন্টার আজমল মশরুর শেখ হাসিনার সরকারকে অবৈধ এবং মানবাধিকার লঙ্গনকারী আখ্যায়ীত করে বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে মানুষ হত্যাকারী হিসাবে যারা রাস্ট্র পরিচালনা করেছে শেখ হাসিনা সেই সব গৃনীতদের উত্তরসূরী। তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য অবশ্যই শেখ হাসিনার বিচার একদিন হবেই।
এম এ মালেক শেখ হাসিনাকে দিল্লীর তাবেদার আখ্যায়িত করে বলেন, বাংলাদেশের আলেম-উলামা হত্যাকারী এবং হত্যার ষড়যন্ত্রকারী শেখ হাসিনার বিচারের জন্য বাংলাদেশের জনগণকে প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি বলেন, বাসে গানপাউটার দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে হত্যাকারী শেখ হাসিনাকে জনগণই বিচার করবে। তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রীকে গৃহবন্দী করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আল্লামা সাঈদীকে হত্যার প্রচেষ্ঠা চালানো হচ্ছে। কিন্তু শেখ হাসিনার কোন ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের জনগণ বাস্তবায়ন হতে দেবে না।
সভাপতির বক্তব্যে ব্যরিস্টার নজরুল ইসলাম নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবী করে বলেন, রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে ক্ষমতায় থাকার ষড়যন্ত্র দেশ প্রেমিক জনগণ বাস্তবায়ন হতে দেবে না। তিনি দেশব্যাপী বোমাবাজি, গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে নিরীহ নারী, শিশু এবং জনতাকে হত্যার জন্য আওয়ামীলীগকে উদ্দেশ্যে বলেন, বাসে গান পাউটার দিয়ে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালীন যারা বর্বর সংস্কৃতি চালু করেছিলো, এখন তারাই সেই ঘৃণ্য বর্বরতা চালাচ্ছে। ব্যরিস্টার নজরুল যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালকে বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অবিচার উল্লেখ করে বলেন, শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের বিরোধীতা এবং ইসলামের পক্ষে রাজনীতি করার অপরাধে তাদের হত্যার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি সরকারকে হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, যদি শেখ হাসিনা সেই দুঃসাহস দেখান তবে যে অবস্থার সৃষ্টি হবে এজন্য তাকে দায়ী থাকতে হবে।