মিসর জুড়ে বিক্ষোভ-সংঘর্ষে নিহত ৭ আহত ২৬১ গ্রেফতার ৪০১
ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থক ও দাঙ্গা পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত সাত জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ২৬১। গত সোমবার রাতভর সংঘর্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। মিসরের হাসপাতাল সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে। এছাড়া ৪০১ জন মুরসি সমর্থক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আলজাজিরা এবং রয়টার্স মিসরের স্বাস্থ্য দফতরের বরাত দিয়ে জানায়, রাজধানী কায়রো উপকণ্ঠ এবং গিজায় বেশ কিছু সংঘর্ষে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
স্বাস্থ্য দফতরের জরুরি বিভাগের প্রধান খালেদ আল-খাতিব জানান, কায়রোর উপকণ্ঠে রামসিসের কাছে দু’জন, গিজায় কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে চারজন এবং আল-বাহার আল-আজমের কাছে একজন নিহত হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। আল-খাতিবের দেয়া হিসাব অনুযায়ী, আহতদের মধ্যে ১৩৭ জন হাসপাতাল ত্যাগ করলেও ১২৪ জন এখনো হাসপাতালে রয়েছেন। আলজাজিরা, রয়টার্স, আইআরআইবি।
এদিকে, রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এমইএনএ জানায়, গত সোমবার রাতে মুরসি সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর বর্তমানে রামসিস চত্বরের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং গতকাল মঙ্গলবার সকালে এ চত্বর যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। গত সোমবার রাতে কায়রোর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মুরসির সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয় এবং গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল।
টু জেড জামান জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সকালেও কায়রোর প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে মুরসি সমর্থকরা অবস্থান নিলে পুলিশ ও মুরসি বিরোধীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। তবে আগের দিন রাত থেকেই সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। রাতভর সংঘর্ষে বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ ৪০১ জন মুরসি সমর্থককে আটক করেছে।
গত সোমবার রাতে রামসিস সড়ক থেকে মুরসির সমর্থকদের সরিয়ে দেয়ার জন্য পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়লে এ সংঘর্ষের শুরু হয। পুলিশ এ সময় ছররা গুলী ব্যবহার করে। সংঘর্ষ চলাকালে মুরসি বিরোধীরা পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয়।
নাসের সিটিতে রিপাবলিকান গার্ড বাহিনীর সদর দফতরের কাছে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। চলতি মাসের ৮ তারিখে সেনাবাহিনীর হামলায় এ এলাকায় ৫০ জন মুরসি সমর্থক নিহত হয়েছিল। এলাকাটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়া, নাসের সিটির রাবা আল-আদাবিয়া মসজিদে ইখওয়ানুল মুসলেমিনের নেতৃত্বে গত ১৯ দিন ধরে অবস্থান ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। এদিকে, অনেক মুরসি সমর্থক নিকটবর্তী ফাতেহ মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের ওপর হামলা হতে পারে এ আশঙ্কায় তারা মসজিদ ত্যাগ করতে অস্বীকার করেছেন। প্রেসিডেন্ট মুরসির পুনর্বহালের দাবিতে সমর্থকরা গত এক সপ্তাহ ধরে রাজধানী কায়রোতে অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ করছেন।